বদ নজর নিরাময়ের ইসলামী ও প্রাকৃতিক পদ্ধতি
🌿 বদ নজর নিরাময়ের ইসলামী ও প্রাকৃতিক পদ্ধতি
বদ নজর বা ʿAyn একটি বাস্তব ও স্বীকৃত বিষয়, যা মানুষের শারীরিক ও মানসিক জীবনে গভীর প্রভাব ফেলে। ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে বদ নজরের চিকিৎসা মূলত দুইভাবে করা হয় — সুন্নাহ অনুসারে ও কুরআনভিত্তিক রুকইয়াহর মাধ্যমে।
🔹 পদ্ধতি ১: ওযুর পানি দ্বারা গোসল
যদি জানা যায় কোন ব্যক্তির দ্বারা বদ নজর লেগেছে,
তাহলে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নির্দেশ দিয়েছেন —
সেই ব্যক্তিকে ওযু করতে বলা হবে, এবং তার ওযুর পানি আক্রান্ত ব্যক্তির ওপর ঢেলে গোসল করানো হবে।
📖 হাদীস:
“বদ নজরদাতা ব্যক্তিকে ওযু করতে বলা হবে,
তারপর সেই ওযুর পানি বদ নজরগ্রস্তের উপর ঢেলে দেওয়া হবে।”
(আবু দাউদ: 3840)
এই পদ্ধতিটি বদ নজর দূর করার অন্যতম প্রমাণিত ও কার্যকর উপায়।
🔹 পদ্ধতি ২: কুরআনভিত্তিক রুকইয়াহ পানি ও তেল
যদি বদ নজরের ব্যক্তি অজানা থাকে,
তাহলে আক্রান্ত ব্যক্তি নিজেই রুকইয়াহ পানির মাধ্যমে আত্ম-চিকিৎসা করতে পারেন।
রুকইয়াহ পানি প্রস্তুতির ধাপ:
এক বালতি পানি নিয়ে নিচের আমলগুলো ৭ বার করে পাঠ করুন:
সূরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি, সূরা কাফিরুন, সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক, সূরা নাস।
পাঠ শেষে পানিতে ফুঁ দিন এবং সেই পানি দ্বারা গোসল করুন।
অতিরিক্তভাবে এক বোতল পানি ও অলিভ অয়েলেও একই আয়াতগুলো পড়ে ফুঁ দিন।
প্রতিদিন ওই পানি দ্বারা গোসল ও তেল মালিশ করুন।
📖 রুকইয়াহ আয়াতসমূহ
কুরআনের বিভিন্ন আয়াত বদ নজর, হিংসা ও জ্বিনের প্রভাব দূর করতে সহায়ক।
এর মধ্যে বিশেষভাবে কার্যকর:
সূরা আল-বাকারা (আয়াত ১০৯, ২৫৫, ২৮৫-২৮৬),
সূরা নিসা (৫৪),
সূরা ইউসুফ (৬৭),
সূরা হিজর (৮৮),
সূরা কাহফ (৩৯–৪০),
সূরা ফালাক ও সূরা নাস।
🌸 পরামর্শ
প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যায় সূরা ফালাক ও নাস পড়ুন।
আল্লাহর জিকির ও দোয়ার মাধ্যমে আত্মাকে প্রশান্ত রাখুন।
কৃতজ্ঞতা, তাকওয়া ও ইতিবাচক মনোভাব বদ নজর থেকে সুরক্ষা দেয়।
উপসংহার:
বদ নজর একটি বাস্তব আঘাত, কিন্তু ইসলামী চিকিৎসা ও রুকইয়াহর মাধ্যমে তা সম্পূর্ণ নিরাময় সম্ভব।
আল্লাহ তায়ালা কুরআনের মাধ্যমে শিফা দিয়েছেন —
“আর আমরা কুরআনে এমন কিছু অবতীর্ণ করেছি, যা মুমিনদের জন্য শিফা ও রহমত।”
(সূরা ইসরা: ৮২)